ঝালকাঠি প্রতিবেদক ॥ “স্কুল বাচঁলে বাচঁবে শিক্ষা” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ঝালকাঠির রাজাপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের দাবীতে,অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রাক্তন, বর্তমান শির্ক্ষাথী ও স্কুলের শিক্ষক মন্ডলী,অভিভাবক ও সচেতন নাগরিক সমাজ বিদ্যালয়ের মান উন্নয়নের লক্ষে মানবতার মা দেশরতœ জননেত্রী মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনায় শান্তিপূর্ণ কালোবেজ ধারন করে প্রতিবাদী মৌনমিছিল কর্মসূচি পালন করেছে।
আজ বুধবার সকাল ১০.৩০ মিনিটে রাজাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে এই কালোবেজ পরে মৌন মিছিলটি শহরের প্রধান শড়ক প্রদক্ষিন শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে শেষ হয়।
উপজেলা চত্বরে এসে চলমান আন্দোলনের ১১ দফা দাবী বাস্তবায়নে দাবীতে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন ছাত্র এ্যাড.বাবু সঞ্জিব কুমার বিশ্বাস,সাবেক অধ্যক্ষ শাহজাহান মোল্লা, আমির খশরু বাবুল, মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম নান্নু মো.নুরুল ইসলাম খলিফা ও অভিভাবক নাজনীন পাখি, প্রমুখ।
আরো যারা উপস্থিত ছিলেন স্কুলের প্রাক্তন শির্ক্ষাথী বাবু চন্দ্র শেখর হালদার ,বাবু নিত্যনন্দন সাহা , মো. জলিল হাওলাদার,প্রান ভল্লব সাহা,আসলাম হোসেন মৃধা,মো. সবুর হাওলাদার,শাহীন মাতুব্বর, নাসরীন আক্তার মুন্নি সহ আরো অনেকে।
ঐতিহ্যবাহী রাজাপুর পাইলট উচ্ছ বিদ্যালয়টি ১৯২৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর একাধিক দাতা বিভিন্ন অংশ হিসেবে জমি দান করেন যা মোট ৯ একর বা তার বেশী। স্কুল কতৃপক্ষের উদাসীনতায় ৯ একর জমি অবৈধ পন্থায় ভূমিদস্যুরা স্কুলের সম্পত্তি দখল করে পাকা স্থাপনা তৈরি করে বিক্রি করেন। স্কুলের ১২০০ শির্ক্ষাথীদের শারিরীক পিটি করার জায়গা সংকোচিত হয় এবং স্কুলের শিক্ষার মান দিন দিন খারাপ হচ্ছে বলে প্রাক্তন শির্ক্ষাথীদের বিবেকের ধ্বংশ থেকে স্কুলের সকল জমি উদ্ধারের জন্য গন আন্দোলনের লক্ষে গত ১৫ জুন ২০২০ তারিখ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বিদ্যালয় প্রশাসন ও পরিচালনা পর্ষদকে ১৫ জুলাই এর মধ্যে জমি উদ্ধারের সময়সীমা বেধে দেয়া হয়। তারই অংশ হিসাবে গত ২৪ জুন ২০২০ তারিখে ১১ দফা দাবী আদায়ের জন্য সংবাদ সম্মেলন করে দাবীগুলো পেশ করা হয়। স্কুল কতৃপক্ষ উল্লেখযোগ্য তেমন কোন ব্যবস্থা এখনও পর্যন্ত দেখাতে পারে নাই বলে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসাবে প্রতিবাদী মৌন মিছিলের মাধ্যমে জানিয়ে দেয় হয়।আন্দোলনের ১১দফা দাবী বাস্তবায়নের লক্ষে আগামী দিনে আরো কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুশিয়ারী দেয়া হচ্ছে। যোক্তিক ১১ দফা দাবী যা নিম্মে দেয়া হলো।
১১ দফা দাবি সমূহ হলোঃ
১। বিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের পিছনের উত্তর পাশের খাল পর্যন্ত জমিটি সীমানা প্রাচীর র্নিমাণ করে একাডেমিক কার্যের উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করতে হবে।
২। মাঠের পশ্চিম পার্শ্বে বিদ্যালয়ের বোডিং পুকুর সংলগ্ন ভোকেশনাল ক্যাম্পাস থেকে ক্রীড়া পরিষদের ভবন র্নিমাণে অনুমতি বাতিল করে র্নিমান সামগ্রী অপসারণ করতে হবে।
৩। ভোকেশনাল ক্যাম্পাসের পূর্বের একাডেমিক ভবনের ভাড়া বাতিল করে একাডেমিক কার্যক্রম পূনরায় চালুসহ তৎসংলগ্ন জমি সুরক্ষায় সীমানা প্রাচীর র্নিমাণ করতে হবে।
৪। বিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী খেলার মাঠের সংকোচন রোধ ও খেলার সুষ্ঠ পরিবেশ রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।
৫। বদ্ধভূমি সংলগ্ন বিদ্যালয়ের জমিতে বিদ্যমান লিজ ও অবৈধ হস্তান্তরকৃত স্থাপনা উচ্ছেদে করে সীমানা নির্ধারণ ও বিদ্যালয়ের নাম সম্বলিত সাইনবোর্ড স্থাপন করতে হবে।
৬। আফসার আলী আকন শিক্ষক-ছাত্র মিলনায়তন এর ভাড়া বাতিল করে পূনরায় মিলনায়তনটি চালু করতে হবে।
৭। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের জন্য বরাদ্ধকৃত বাসভবনের দক্ষিন পার্শ্বে থানা রোড পর্যন্ত পতিত জমিতে সীমানা নির্ধারণ করে সাইনবোর্ড স্থাপন করতে হবে।
৮। বিগত বছর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রদানকৃত লীজ বাতিল করে উক্ত সম্পত্তি বিদ্যালয়ের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কাজে ব্যবহার করতে হবে।
৯। বিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পরিচালনা পর্ষদ গঠনসহ সকল প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রম স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।
১০। ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত সহ¯্রাের্ধো শিক্ষার্থীর জন্য আবশ্যক প্যারেড গ্রাউন্ড নিশ্চিত ও দীর্ঘ দিনের আলোচিত গ্রন্থাগার স্থাপন করতে হবে।
১১। ক্যাম্পাসের সম্মুখভাগে একাডেমিক পরিবেশ ও সৌন্দর্য্য বিনষ্ট করে এমন কোন উদ্যোগ,যেমন-স্টল র্নিমান বা ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান র্নিমান না করার স্থায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে।
উপরের দাবী বাস্তবায়নের লক্ষে চলামান কর্মসূচির অংশ হিসাবে আজকের প্রতিবাদী মৌনমিছিল কর্মসূচির মাধমে দাবী আদায়ের চেষ্টা অব্যহত থাকবে,যদি স্কুল কতৃপক্ষ দাবী আদায়ে ব্যর্থ হয় তাহলে আগামী দিনে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারী প্রদান করেন।এই কর্মসূচি চলমান রাখতে সার্বিক সহযোগীতা করছেন আবু হাসনাত সুমন সিকদার,জাকারিয়া সুমন,মনিরুজ্জামান রেজোয়ান,সাকিদ মাহমুদ সজল, মো. তৌহিদুল ইসলাম তুহিন, মো. রাজিব ফরাজী, সৈয়দ জাকারিয়া আলম নয়নসহ আরো অনেকে। চলমান আন্দোলনের বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদ হোসেন এর মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিব করেননি।
Leave a Reply